সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা তাহিরপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ র‌্যাবের অভিযানে ভারতীয় ২৭২ বোতল মদ জব্দ যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে তারা দেশের শত্রু : কয়ছর এম আহমদ প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত : কয়ছর এম আহমদ বিশ্বম্ভরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত শান্তিগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪০ দেশ যেন মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয় : তারেক রহমান সত্যশব্দের বর্ষার আয়োজন ‘বাদল গেছে টুটি’ দিরাই থানা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইউকের ফ্যামিলি গ্যাদারিং অনুষ্ঠিত জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে : কয়ছর এম আহমেদ জামালগঞ্জে উড়ালসড়ক প্রকল্প পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা তাহিরপুরে তোপের মুখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শান্তিগঞ্জে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা জাতি-ধর্মে ভেদাভেদ থাকবে না, এই দেশ সবার : সেনাপ্রধান বর্ণাঢ্য আয়োজনে জন্মাষ্টমী উদযাপিত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবি সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের ‘সাহিত্য আড্ডা’ অনুষ্ঠিত

শহীদ সোহাগ মিয়ার পরিবারের পাশে বন্ধুসভা

  • আপলোড সময় : ২৩-১০-২০২৪ ১২:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-১০-২০২৪ ১২:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
শহীদ সোহাগ মিয়ার পরিবারের পাশে বন্ধুসভা
স্টাফ রিপোর্টার :: সংসারে দারিদ্র আর টানাপোড়েনের কারণে গ্রাম ছেড়ে দুইভাই চলে যান ঢাকায়। সেখানে কাজ করেন পোশাক কারখানায়। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন তারা। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন দুইভাই। এর মধ্যে বড় ভাই সোহাগ মিয়া (২৪) ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। ছোট ভাই শুভ মিয়া (২০) এখনো সেদিনের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। শহীদ সোহাগের হতদরিদ্র পরিবারের খোঁজ নিতে সোমবার তাদের বাড়িতে যান সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার বন্ধুরা। সোহাগের বাবা, মা, শুভ ও তাঁর স্ত্রী, পরিবারের আরও দুই শিশুর জন্য নতুন কাপড় এবং খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যান তাঁরা। এতে খুশি হন ওই পরিবারের সদস্যরা। এই উদ্যাগের প্রশংসা করেন প্রতিবেশীরাও। শহীদ সোহাগ মিয়ার বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামে। জেলা শহর থেকে ওই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। সোমবার জেলা শহর থেকে সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা মো. রাজু আহমেদ, সাবেক সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, সভাপতি সৌরভ সরকার, সাধারণ স¤পাদক তাজকিরা হক তাজিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য জাকিরুল হক মান্না ওই গ্রামে সোহাগ মিয়ার বাড়িতে যান। বাড়িতে তখন সোহাগ মিয়ার বৃদ্ধ বাবা কালাম মিয়া, মা রোকেয়া বেগমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বন্ধুসভার পক্ষ থেকে কালাম মিয়াকে নতুন লুঙ্গি ও গেঞ্জি, রোকেয়া বেগমের জন্য শাড়ি, আহত শুভ মিয়ার জন্য শার্ট, তাঁর স্ত্রীর জন্য থ্রি-পিস, ঘরের সাত বছর ও তিনমাস বয়সী দুই কন্যা শিশুর জন্য দুটি জামা, তিনটি কম্বল উপহার দেন। এছাড়া পরিবারের জন্য ছয় কেজি চাল, এক লিটার তেল, এক কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক কেজি চিনি, এক কেজি ডাল, নুডুলস, মুড়ি, সুজি দেওয়া হয়। বন্ধুসভার সদস্য বেশকিছু সময় তাদের বাড়িতে কাটান এবং পরিবারের খোঁজ খবর নেন। বন্ধুসভার সভাপতি সৌরভ সরকার বলেন, শহীদ সোহাগ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে পেরে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। খুবই সহজসরল তারা। এই কষ্টের মধ্যেও তাদের আন্তরিকতা আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা বলে এসেছি, যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। বন্ধুসভার সদস্যদের পাশে খুশি হন আবুল কালাম। বলেন, আমি গরীব মানুষ। ছেলেডার রোজগারেই সংসার, আমার ওষুধের খরচ চলত। এখন কেডায় সংসার চালাইব। বড় চিন্তাত আছি। তিনি জানান, আহত শুভ মিয়ার পায়ে এখনো গুলির ক্ষত আছে। মাঝেমধ্যে প্রচন্ড ব্যথা হয়। মা রোকেয়া বেগম নিজে বন্ধুসভার সদস্যদের আদর-আপ্যায়ন করেন। নিজেদের গাছের কলা খেতে দেন। রোকেয়া বলেন, ছেলেডার জন্য কানতে কানতে চোখের পানি শুকাইগিছে। এখন পুলার বয়সী কেউরে পাশে দেখলে শান্তি পাই। হেরা শহর থাকি কত কিছু লইয়া আইছে। দেইখ্যা ভালা লাগছে। প্রতিবেশী ফারুক মিয়া বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ অনেকেই এসেছেন। দরিদ্র পরিবারটিকে সহায়তা করেছেন। তাঁদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। সোহাগের বাবা কালাম মিয়ার সঙ্গে কথা বলেন জানা গেছে, তাঁর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বড়, বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে সোহাগ মিয়া দ্বিতীয়। চার বছর আগে সোহাগ সৌদিআরবে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। এরপর জমি, ঘরের গরু আর মহাজনি সুদে ঋণ করে প্রায় চার লাখ টাকা জোগার করে দেন দালালকে। কিন্তু সব টাকা খোঁয়া যায়। এরপর সুদের টাকার চাপে ছোট ভাই শুভ মিয়াকে (২০) নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালান সোহাগ। ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেন দুই ভাই। থাকতেন বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায়। যা আয় করতেন মাসে মাসে সেখান থেকে কিছু টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করছিলেন বাবা। হৃদরোগে আক্রান্ত কালাম মিয়ার চিকিৎসার খরচও দিতেন সোহাগ। ৫ আগস্ট সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন দুইভাই। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন দুই ভাই। ঘটনাস্থলেই সোহাগ মিয়া মারা যান।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা

লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা